নামের আড়ালে নাম



ইদ্রিস থেকে ইলিয়াস কাঞ্চন
চলচ্চিত্র নায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনের বাবা-মায়ের রাখা নাম মোহাম্মদ ইদ্রিস। স্কুলে পড়ার সময় এক শিক্ষক তা পরিবর্তন করে রাখেন মোহাম্মদ ইলিয়াস। কিন্তু বিচক্ষণ এই অভিনেতা ওই সময়ই ভাবলেন বাবা-মায়ের দেওয়া নাম পরিবর্তন করা ঠিক হবে না। তাই পরিচয় দিতেন ইদ্রিস ইলিয়াস নামে। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ হওয়ার পরের ঘটনা। পাড়ার সৃজন সংঘ ক্লাব থেকে মঞ্চস্থ করা সুবচননির্বাসনেনাটকে অভিনয় করেছিলেন ইলিয়াস। ওই দিন নাটক দেখতে প্রধান অতিথি হিসেবে গিয়েছিলেন পরিচালক সুভাষ দত্ত। ইলিয়াসের অভিনয় দেখে মুগ্ধ হয়ে তাঁকে একদিন দেখাও করতে বলেন স্বনামধন্য এই পরিচালক। দেখা করতে গেলে সুভাষ দত্ত চলচ্চিত্রে অভিনয়ের প্রস্তাব দেন। রাজি হয়ে যান ইলিয়াস। গোল বাধে ‘ইদ্রিস ইলিয়াস’ নাম নিয়ে।
নাম পরিবর্তন প্রসঙ্গে ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, ‘ওই দিন সুভাষ দা বলেছিলেন, “সিনেমাতে এ নাম রাখা যাবে না। নামটি পরিবর্তন করতে হবে।” পরে একদিন গেলাম, তিনি আমাকে বললেন, “আজ থেকে তোমার নাম ইলিয়াস কাঞ্চন”।’ ওই নামেই ১৯৭৭ সালে প্রথম সুভাষ দত্তের বসুন্ধরা ছবিতে অভিনয় করেন। সেই থেকে তিনি ইলিয়াস কাঞ্চন হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেন।

আমিন খানের আড়ালে স্বপন
তাঁর ডাক নাম স্বপন। পুরো নাম আমিনুল ইসলাম। স্কুলের বন্ধুরা এখনো স্বপন বলেই ডাকেন। ১৯৯০ সালে বিএফডিসির নতুন মুখের সন্ধানে কার্যক্রমের মাধ্যমে চলচ্চিত্রে পা রাখেন স্বপন। প্রথম ছবি অবুঝদুটিমন পরিচালক ছিলেন মোহাম্মদ হোসেন। আমিন খান বলেন, ছবির শুটিং শুরু হয় ১৯৯২ সালে। শুটিংয়ের আগে আগে ১৯৯১ সালের শেষদিকে পরিচালক কয়েকজন সাংবাদিককে নিয়ে নতুন নাম দেওয়ার জন্য একটি রেস্তোরাঁয় বসেন। আমিন খান বলেন, ‘অনেক নাম থেকে বাছাই করে সাংবাদিকেরাই এই নামটি দিয়েছিলেন।’

শাবনূর নামটি পরিচালক এহতেশামের দেওয়া

পুরো নাম শারমিন নাহিদ নূপুর। সিনেমায় আসার আগে তাঁর নাম ছিল ‘নূপুর’। চলচ্চিত্রে অভিনয় করতে এসেই একসময় শাবনূর হয়ে গেলেন তিনি। ১৯৯৩ সালের কথা। ওই বছর চলচ্চিত্রে অভিষেক হয় শাবনূরের। প্রথম ছবি চাঁদনীরাতে। ছবিটির পরিচালক ছিলেন এহতেশাম। ওই ছবিতে অভিনয় শুরু করার আগেই নূপুর নামটি পরিবর্তন করে দেন পরিচালক। রাখা হয় শাবনূর। সেই থেকে শাবনূর নামেই পরিচিত তিনি।
পরিবারের সবার কাছেমাসুদ রানা

পরিবারের কাছে তিনি এখনো মাসুদ রানা। এই নামেই ডাকেন বাবা-মাসহ সবাই। কিন্তু এই ‘মাসুদ রানা’র দেশজুড়ে থাকা অনেক ভক্তই জানেন না তিনি ঢালিউডের জনপ্রিয় নায়ক শাকিব খান। দর্শক ও ভক্তের মনে ঠাঁই করে নিয়েছেন শাকিব খান নামেই।
নামের পরিবর্তন কীভাবে হলো? ১৯৯৯ প্রথম ছবি অনন্তভালোবাসায় অভিনয় করতে গিয়ে তাঁর নাম মাসুদ রানা থেকে শাকিব খান হয়ে যায়। সেদিনের স্মৃতি মনে করে শাকিব খান বলেন, ‘সেই সময় শাকিল খানও চলচ্চিত্রে অভিনয় করতেন। আবার মাসুদ রানার সঙ্গে সোহেল রানা মিলে যায়। শেষ পর্যন্ত পরিচালক সোহান ভাই ও প্রযোজক কুদ্দুস ভাই মিলে আমাকে শাকিব খান নামটি দিয়েছিলেন।
স্বপ্নে পাওয়া নাম পূর্ণিমা
আত্মীয়স্বজন ও পরিবারের সবাই তাকে রিতা নামে ডাকেন। ফেসবুক আইডিতে এই নামটি রেখেছেন একসময়ের জনপ্রিয় অভিনেত্রী পূর্ণিমা। অবশ্য পূর্ণিমা ছাড়া তাঁর পুরো নাম দিলারা হানিফ রিতা। পূর্ণিমা নামটি তাঁর নামের সঙ্গে যুক্ত হয় ১৯৯৭ সালে চলচ্চিত্রে অভিনয় করতে এসে। ১৯৯৭ সালে জাকির হোসেনের জীবনতোমারআমারছবিতে প্রথম অভিনয় করেন তিনি। পূর্ণিমা বললেন, ‘ছবিটির প্রযোজক ছিলেন মতিউর রহমান। তিনি নাকি পূর্ণিমা নামটি স্বপ্নে দেখেছিলেন। ওনার ডাক নাম ছিল পানু। তিনি একদিন আমাকে বললেন, ‘‘তুমি তো দেখতে পূর্ণিমার মতোই। সিনেমায় তোমার নাম হবে পূর্ণিমা। এই নামটি আমি স্বপ্নে পেয়েছি।” পরদিন রমনা রেস্তোরাঁয় সাংবাদিকদের সামনে আমাকে পূর্ণিমা নামে পরিচয় করিয়ে দিলেন।’ তারপর থেকে রিতা হয়ে গেলেন পূর্ণিমা।
মাহিয়া থেকে মাহিয়া মাহি
পুরো নাম মাহিয়া শারমিন আক্তার নিপা। সিনেমায় অভিনয় শুরু করার আগে নিপা বলেই ডাকত সবাই। ২০১২ সালে ভালোবাসাররংছবিতে অভিনয় করতে এসেই মাহিয়া নামটির সঙ্গে মাহি নামটি যোগ হয়। মাহিয়া মাহি নামে পরিচিতি পান এই অভিনেত্রী।
মাহি বলেন, ‘ভালোবাসাররংছবির শুটিংয়ের আগে আগে জাজ মাল্টিমিডিয়ার আজিজ ভাই মাহি নামটি পছন্দ করে দিয়েছিলেন।
নামের আড়ালে নাম নামের আড়ালে নাম Reviewed by Thailand Life on 8:49 AM Rating: 5

No comments:

Powered by Blogger.