নিজের বারোটা বাজাতে যে ১৫টা কাজ রোজ করছেন

রোজনামচার হুড়োতাড়াতে আমরা এতটা নাজেহাল থাকি যে নিজেদের শরীর স্বস্থ্যের কথা আর বিশেষ মাথায় থাকে না। কখনও যদি বা মাথায় কোনও এক কোণে উঁকি দেয়, তবুও তাকে আমল দেওয়ার মতো সময় সুযোগ বিশেষ হয় না। আর সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হল, আমাদের শরীরের জন্যে ঠিক কোনটা ভালো, বা কী কী ক্ষতির মুখে আমরা তাকে ধীরে ধীরে ঠেলে দিচ্ছি, তার হদিশও নেই আমাদের কাছে। 

তেমনই ১৫টি অভ্যেসের একটি তালিকা দেওয়া হল... মিলিয়ে নিন, এর মধ্যে কোনগুলো আপনিও প্রতিনিয়ত করে থাকেন। 

১. অফিসে দীর্ঘক্ষণ বসে থাকেন। আর চোখ আটকে থাকে সামনের কম্পিউটার স্ক্রিনে। দিন শেষে বাড়ি ফিরে শরীরের বিভিন্ন অংশে ব্যথার উঁকিঝুঁকি। শুধু কি তাই দীর্ঘক্ষণ একভাবে বসে থাকার ফলে ক্রমেই বাড়তে থাকে মধ্যপ্রদেশ। এই সবের থেকে নিজেকে বাঁচাতে চাইলে, মাঝে মধ্যেই সিট থেকে উঠে একটু হেঁটে নিন। পারলে ওয়াশরুমে গিয়ে একটু স্ট্রেচিংও করে নিতে পারেন। 


২. লিফটে করে ওঠা নামা করাটাই আপনার অভ্যেস। কিন্তু এই অভ্যেসটা বদলানোর সময় এসে গেছে। প্রতিদিন সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করার অভ্যেস রপ্ত করুন। এতে শরীর ঝরঝরে থাকবে। 

৩. অফিসে লাঞ্চের সময়েও আপনি আপনার ডেস্কের মোহ কাটিয়ে উঠতে পারেন না। বিশ্বাস করুন বা নাই করুন, সত্যিটা হল, এইভাবেই ক্রমশ বাড়তে থাকে ওয়েস্টলাইন। 

৪. প্রতিদিন লাঞ্চে বাইরের খাবার খাওয়া আপনার অভ্যেসে দাঁড়িয়ে গেছে। সময় থাকতে এই অভ্যেস বদলে ফেলুন। নইলে সামনে সমূহ বিপদ আপনার অপেক্ষায়। 

৫. সারাদিনে কোনওক্রমে আপনি এক লিটার জল খান। জানেন কি আমাদের শরীরে প্রায় ৬০ শতাংশই জল। ফলে সারাদিনে অন্তত আড়াই লিটার জল না খেলে শরীরের স্বাভাবিক কাজকর্মে বাধা পড়ে। শরীর ভিতরে ভিতরে শুকিয়ে যায়। দেখা দেয় ডিহাইড্রেশনের সমস্যা। 

৬. অত্যধিক চিন্তা করার বদঅভ্যেস বাদ দিন। অযথা চিন্তা করে কি কোনও সমস্যার সমাধান সম্ভব! তাই আকাশ পাতাল ভেবে নিজেকে ব্যতিব্যস্ত না করে, হাসিমুখে জীবনযাপন করুন। দেখবেন, সমস্যাও আপনার ধারে কাছে ঘেঁসবে না। 

৭. সূর্যের আলো আপনার গায়ে লাগে না। বাড়িতে এসি, গাড়ি এসি, অফিসও এসি। সন্ধ্যে বা রাতে যখন অফিস থেকে বেরোন তখনও সূর্যের সঙ্গে মুলাকাত হওয়ার কোনও সুযোগই হয় না। কিন্তু জানেন কি, দিনে অন্তত আধ ঘন্টা সূর্যের আলোয় থাকা ভালো। সূর্যের আলো থেকে আমাদের শরীর ভিটামিন ডি পায়। সুস্থ ও সতেজ থাকার জন্যে এই ভিটামিন ডি একান্ত জরুরি। 

৮. মেক-আপ না তুলেই ঘুমিয়ে পড়েন। সারা দিনের ক্লান্তি আপনাকে এতটা ঘিরে ধরে রাতে যে ঘুমোতে যাওয়ার আগে মেক-আপ তুলতে ইচ্ছেই করে না। এটা অভ্যেসে পরিণত করবেন না। মেক-আপ থাকলে আপনার ত্বক নিঃশ্বাস নিতে পারে না। ফলে বাড়তে থাকে নানা রকম স্কিন ডিজিজ হওয়ার আশঙ্কা। 

৯. আপনার কোনও শখ নেই! এটা কিন্তু মোটেই ভালো নয়। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে যাঁদের খেলা, নাচ, গান, ছবি আঁকার মতো নানা শখ আছে তাঁরা স্ট্রেসের মোকাবিলা বেশি ভালোভাবে করতে পারেন। 

১০. দীর্ঘ সময় ধরে কানে হেড ফোন গোঁজা থাকলে দেখা দিতে পারে কানে শোনার সমস্যা এবং ভার্টিগো। 

১১. ব্রেক নেওয়া আপনার অভিধানে নেই। ৩৬৫দিনই আপনার এক রুটিন। এমন অভ্যেস থাকলে তার থেকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বেরিয়ে আসুন। বেড়াতে গেলে আপনার হৃদয় ভালো থাকবে। আর হৃদরোগও আপনার থেকে বেশ কয়েক হাত দূরেই থাকবে। 

১২. বিভিন্ন কাজে এদিকওদিক যাওয়া আসা করতে করতে রাস্তাতেই আপনার কেটে যায় দীর্ঘ সময়। আর এতে ক্লান্তি ঘিরে থাকে আপনাকে সর্বক্ষণ। তাই চেষ্টা করুন, একটানা অনেকটা সময় রাস্তাঘাটে না কাটাতে। 

১৩. আপনার ধূমপানের অভ্যেস থাকলে অথবা ধূমপান করেন এমন কারও সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ সময় কাটালে, একটু ভেবে দেখুন। আপনি কিন্তু শরীরের মস্ত বড় ক্ষতি করে ফেলছেন। 


১৪. গভীর রাতে ঘুমাতে যাওয়া আপনার অভ্যেস। এদিকে প্রতিদিন সক্কাল সক্কাল উঠে পড়তেই হয়। ফলে ঘুমের সময় এসে দাঁড়ায় ওই পাঁচ-সাড়ে পাঁচ ঘন্টায়। এমনটা দীর্ঘদিন চলতে থাকলে শরীরের উপর খারাপ প্রভাব পড়তে বাধ্য। সেই সঙ্গে দেখা দেবে নানা অসুখ। তাই চেষ্টা করুন কম করে অন্তত সাত ঘন্টা ঘুমানোর। 


১৫. ফল খাওয়া আপনার পোষায় না। কিন্তু এই চিন্তা বদলাতে হবে যদি সুস্থ থাকতে চান। সুস্থ, সতেজ ও নীরোগ থাকতে চাইলে দিনে একটি করে ফল খান।
নিজের বারোটা বাজাতে যে ১৫টা কাজ রোজ করছেন নিজের বারোটা বাজাতে যে ১৫টা কাজ রোজ করছেন Reviewed by Thailand Life on 9:30 AM Rating: 5

No comments:

Powered by Blogger.