ওষুধ খান বুঝে শুনে

ওষুধ খান বুঝে শুনে

(Dont Take Antibiotics Any Time)

কথায় কথায় অ্যান্টিবায়োটিক খেলে অন্য আরও নানা রকম বিপদের সঙ্গে বাড়তে শুরু করে ওজনও।কাজেই রাশ টানুন এই বদ অভ্যাসে। 

সুপার বাগ, অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স ইত্যাদি নিয়ে কে আর মাথা ঘামায়! একটাতে রেজিস্ট্যান্স হলে আরও শত শত আছে লাইনে৷ চালাক-চতুর, প্রায় অমর টাইপের সুপার বাগ এলেই বা কী? যখন আসবে তখন দেখা যাবে৷ ফলে গ্যাস-অম্বল-ব্যথার বড়ির মতো টপাটপ অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়াতেও কোনও বিরতি নেই৷ ভাইরাল ফিভারেও অ্যান্টিবায়োটিক, লুজ মোশনেও অ্যান্টিবায়োটিক৷ 
ডোজ খুশি মতো৷ ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়ার বালাই নেই৷ ফলে ওই নির্দিষ্ট গ্রুপের ওষুধ পরে আর কাজ করে না, সে যেমন এক কথা, ক্ষতিকর জীবাণুর পাশাপাশি শরীরের ভালো জীবাণুগুলিও শেষ হয়ে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তলানীতে চলে আসে, রাস্তা খুলে যায় অবিরাম অসুখের, সে হল দ্বিতীয় কথা৷ তৃতীয়, চতুর্থ... কথাও আছে৷ সেই তালিকায় সম্প্রতি যুক্ত হল ওজন বাড়ার গল্প৷ অবাক লাগলেও কথাটা সত্যি৷ নিরন্তর অ্যান্টিবায়োটিকের প্রভাবে এমন সব পরিবর্তন ঘটে যায় শরীরে, যার ফলে ওজন ও ভুঁড়ি বাড়তে শুরু করে বেশ দ্রুত গতিতে৷ 

অ্যান্টিবায়োটিকে বাড়ছে ওজন 


শরীরে ফ্যাটের বাড়-বৃদ্ধি ও খিদের নিয়ন্ত্রণ আছে যে হরমোনের ওপর, তার নাম ঘ্রেলিন৷ এর কার্যকারিতা অনেকটাই নির্ভর করে কিছু ভালো জীবাণুর উপস্থিতির উপর৷ নির্বিচার অ্যান্টিবায়োটিকের আক্রমণে খারাপের সঙ্গে সেই সব ভালোরা প্রতিনিয়ত ধ্বংস হতে থাকলে ঘ্রেলিন আর ঠিক করে কাজ করতে পারে না৷ শুরু হয় ফ্যাট ও খিদের রাজত্ব৷ তার হাত ধরে, বাড়তে শুরু করে ওজন৷ 

আবার অ্যান্টিবায়োটিকের প্রতাপে অন্য আরেক দল ভালো ব্যাকটেরিয়ার মৃত্যুতে পাকস্থলিতে ইস্ট ইনফেকশনের দরজা খুলে যায়৷ যার ফলে শরীরে জল জমার হার বাড়ে, থাইরয়েড হরমোন নিঃসরণের পথে কিছু বাধা উপস্থিত হয়৷ আর সবচেয়ে বড়ো কথা, মিষ্টি খাওয়ার তাগিদ বেড়ে যায় হুড়মুড় করে৷ ফলে ওজন তো বাড়েই, পেটেও চর্বি জমতে শুরু করে খুব দ্রুত গতিতে৷ কারণ জানা নেই, তবে দেখা গিয়েছে মেয়েদের এই সমস্যা বেশি হয়৷ 
ছেলেদেরও যে হয় না তা নয়, তবে তুলনায় অনেক কম৷ কাজেই বিশেষজ্ঞদের মতে, কথায় কথায় অ্যান্টিবায়োটিক না খেয়ে ইমিউনিটি বাড়ানোর দিকে নজর দিন৷ পেট খারাপ বা সর্দি-জ্বরের মতো সাধারণ সমস্যা এক-দু'দিন অপেক্ষা করলে ও একটু নিয়ম মানলে এমনিতেই সেরে যায়৷ ওষুধের প্রয়োজন হয় না৷ 

আবার অধিকাংশ ক্ষেত্রে এই সব সমস্যার মূলে থাকে ভাইরাস৷ ব্যাকটেরিয়া নয়৷ কাজেই তাদের মারণ-যজ্ঞে অ্যান্টিবায়োটিকের কোনও ভূমিকা থাকে না৷ সুস্থ-সবল মানুষের ক্ষেত্রে সেকেন্ডারি ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশনের ভয়ে ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া আগে থেকে অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ার কোনও যুক্তিই নেই৷ অতএব সাবধান৷ ওষুধের কবলে না পড়ে নিজের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর চেষ্টা করুন৷ ওজনও বশে থাকবে সেই একই পদ্ধতিতে৷ 

ইমিউনিটি বাড়ান, রোগা থাকুন 

১. ঘরে বানানো টাটকা সুষম খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন৷ 

২. টাটকা ও শুকনো ফল, শাক-সবজি খান নিয়মিত৷ 

৩. খান গ্রিন টি৷ দিনে ২-৩ কাপ৷ 

৪. খাওয়ার অনিয়ম হলে ডাক্তারের পরামর্শ মতো ভিটামিন -মিনারেল খেতে হতে পারে৷ 

৫. ডায়েটিং করলেও খেয়াল রাখুন পুষ্টির ঘাটতি যেন না হয়৷ 

৬. নিয়মিত ব্যায়াম করুন৷ 

৭. মাত্রাছাড়া স্ট্রেসে ওজন বাড়ে , ইমিউনিটি কমে৷ কাজেই চেষ্টা করুন তাকে বশে রাখতে৷ 

৮. ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোনও ওষুধই কথায় কথায় খাবেন না৷ অ্যান্টিবায়োটিক তো নয়ই৷
ওষুধ খান বুঝে শুনে ওষুধ খান বুঝে শুনে Reviewed by Thailand Life on 2:23 AM Rating: 5

No comments:

Powered by Blogger.