শিশুর দাম ঠিক করল রেজিস্ট্রি অফিস, বিস্মিত হাইকোর্টও

মেখলিগঞ্জে দত্তকের নামে শিশু বিক্রির মামলায় আবারও চাঞ্চল্যকর 'আবিষ্কার'৷ সোমবার হাইকোর্টে শুনানি-পর্বে জানা গেল, জমি-বাড়ির দাম নির্ধারণ করে যারা, তারাই 'সম্পত্তি'-জ্ঞানে সদ্যোজাতের দাম ঠিক করেছিল৷ কোচবিহারের মেখলিগঞ্জ সাব রেজিস্ট্রি অফিস শিশুটিকে দত্তক দেওয়ার জন্য রেজিস্ট্রি করে৷ যদিও অভিযোগ, সন্তান দত্তকের নামে আসলে দু'লক্ষ টাকায় বিক্রি করা হয়েছে৷ রেজিস্ট্রি অফিসের ভূমিকায় হতবাক বিচারপতি অসীমকুমার রায় ও বিচারপতি মলয়মরুত্‍ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চও৷

সন্তান বিক্রি করে টাকা নেওয়ায় অভিযুক্ত বাবার আগাম জামিনের আবেদন খারিজ করে দিয়েছে হাইকোর্ট৷ একই সঙ্গে তদন্তের গতিপ্রকৃতিতে আদালত মনে করছে, কারচুপি হয়েছে৷ নতুন তদন্তকারী অফিসারকে তদন্তে ত্রুটির কারণগুলি বুধবার লিখিত ভাবে জানাতে বলা হয়েছে৷ প্রসঙ্গত, আগের অফিসারকে আগের দিনই সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল ডিভিশন বেঞ্চ৷


মেখলিগঞ্জের শ্যামলীর (নাম পরিবর্তিত) গর্ভে বিয়ের আগেই সন্তান আসায় শ্বশুরবাড়ির অমত ছিল বিয়েতে৷ প্রতিবেশীদের চাপাচাপিতে শেষ পর্যন্ত তাঁকে বিয়ে করতে বাধ্য হয় প্রেমিক৷ হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে গর্ভপাতের চেষ্টা করা হয়৷ কিন্ত্ত চিকিত্‍সকদের নিষেধে তা সফল হয়নি৷ শেষমেশ সদ্যোজাতকে ঘোকসাডাঙা থানা এলাকার এক দম্পত্তির কাছে বিক্রি করা হয় বলে অভিযোগ৷

যদিও অভিযুক্ত স্বামীর দাবি, মেখলিগঞ্জ সাব রেজিস্ট্রি অফিস থেকে রীতিমতো রেজিস্ট্রি করেই দত্তক দেওয়া হয়েছে সন্তানকে৷ সাব রেজিস্ট্রি অফিসের যে নথি জমা পড়েছে আদালতে, তাতে দেখা যাচ্ছে, রেজিস্ট্রি অফিস জমি-বাড়ির মতোই মূল্য নির্ধারণ (ভ্যালুয়েশন) করেছে ওই সদ্যোজাতের৷ সরকারি আইনজীবী শেখর বর্মন বলেন, 'রেজিস্ট্রি অফিস কী করে সদ্যোজাতকে সম্পত্তি হিসেবে চিহ্নিত করে মূল্য নির্ধারণ করল, তা প্রবল বিস্ময়ের৷'

সরকারি আইনজীবী বলেন, 'কোনও শিশুকে দত্তক নেওয়ার জন্য প্রথমে জেলা বিচারকের কাছে আবেদন করতে হয়৷ তার পরে হিন্দু মেনটেন্যান্স অ্যান্ড অ্যাডপটেশন আইন ১৯৫৬ অনুযায়ী বাচ্চা দত্তক নিতে হয়৷' পরে সেই দত্তকের চুক্তি রেজিস্ট্রি অফিসে রেজিস্ট্রেশন করানো যায়৷ এ ক্ষেত্রে দত্তক আইনের তোয়াক্কা না করেই সাব রেজিস্ট্রারের অফিস দত্তকনামা তৈরি করে বাচ্চা দত্তক দিয়েছে৷ আপাতত অবশ্য ডিভিশন বেঞ্চ তদন্তকারী অফিসারকে হলফনামা দিয়ে তদন্তে ত্রুটির কারণই শুধু দর্শাতে বলেছে৷

পুলিশি তদন্তে মেখলিগঞ্জের সাব রেজিস্ট্রার তুলসী লামা অবশ্য দাবি করেছেন, শিশু দত্তক দেওয়ার নিয়ম তাঁর জানা ছিল না৷ বিষয়টি জানার পরেই নোটিস ইস্যু করে আগের নির্দেশ বাতিল করা হয়েছে৷
শিশুর দাম ঠিক করল রেজিস্ট্রি অফিস, বিস্মিত হাইকোর্টও শিশুর দাম ঠিক করল রেজিস্ট্রি অফিস, বিস্মিত হাইকোর্টও Reviewed by Thailand Life on 9:47 PM Rating: 5

1 comment:

  1. :সন্তান দম্পত্তিদের কষ্টটা একটু বোঝার চেষ্টা করুন।তারা এই সন্তানকে সুখি রাখবে।সন্তানের মা আরো সন্তান জন্ম দিয়ে নিজের কষ্ট লাঘব করতে পারবে।কিন্তু নি:সন্তান দম্পত্তিদের কোন দিন সন্তান হবেনা
    তারা কি করবে।তাই আপনি সন্তান বিক্রি করে অন্য মাকে মা ডাক শোনার সু্যোগ করে দিয়েছেন।সৃষ্টিকর্তা আপনার মঙ্গল করবেন।আমি নি:সন্তান,তাই আমি এর কষ্ট বুঝি।কি কঠিন কষ্ট,

    ReplyDelete

Powered by Blogger.