সাক্ষী তাজ, আত্মহত্যার পথে ভিনধর্মী প্রেমী যুগল

প্রেমিকা মুসলিম, প্রেমিক হিন্দু। এই অপরাধে দুই এক আত্মা এক প্রাণকে কোনওমতেই এক হতে দেয়নি তাঁদের পরিবার। ধর্মের ধুঁয়ো তুলে, সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেননি বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়-পরিজন এমনকী ধর্মীয় নেতারাও। অবশেষে ইহলোকে এক হতে না পেরে, হাতে হাত রেখে পরলোকে যাওয়ার কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হন প্রেমিক যুগল। ভালোবাসার এই অদ্ভূত মিলনের জন্য তাঁরা বেছে নেন ভালোবাসার সৌধকে। আগ্রার তাজমহলের খুব কাছে, একে অপরের গলার নলি ব্লেড দিয়ে কেটে আত্মহত্যার চেষ্টা করলেন প্রেমিক-প্রেমিকা। স্থানীয়দের প্রচেষ্টায় রক্তে মাখামাখি হয়ে যখন তাঁরা হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে ঢুকছেন, তখনও দু জোড়া হাতকে আলাদা করা যায়নি।



দেরাদুনের বাসিন্দা ২৫ বছরের রাজবীর সিং হিন্দু ঘরের ছেলে। তিনি ভালোবেসেছেন কারবালার বাসিন্দা মুসলিম ধর্মাবলম্বী শবনম আলিকে। কিন্তু, তাঁদের বিয়েতে বাধ সাধে দুজনের পরিবার। সবারই উপদেশ, ভিন ধর্মে বিয়ে, নৈব নৈব চ। পরিবারকে বোঝাতে রাজবীর ও শবনম অন্যান্য আত্মীয় পরিজন এবং ধর্মীয় নেতাদের দ্বারস্থ হলেও, সব চেষ্টাই বিফলে যায়। অবসাদগ্রস্ত হয়ে চরম সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হন প্রেমিক ও প্রেমিকা।

তাজমহলের কয়েক মিটার দূরে তাজ নেচার ওয়াকে বুধবার কর্মীরা দেখতে পান, রক্তে ভেসে যাচ্ছে একটি ছেলে ও একটি মেয়ের শরীর। সঙ্গে সঙ্গে দুজনকেই নিয়ে যাওয়া হয় এস এন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। দুজনের অবস্থাই অত্যন্ত আশঙ্কাজনক।

বয়ান রেকর্ড করতে অ্যাডিশনাল সিটি ম্যাজিস্ট্রেট এম পি সিং হাসপাতালে গেলে, রাজবীর কোনওমতে জানান, 'শবনম ও আমি দুজনেই বাড়ির লোককে অনেক বুঝিয়েছিলাম, আমাদের বিয়েতে যাতে তাঁরা মত দেন। কিন্তু, সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায় ধর্মীয় বেড়াজাল। এক হওয়ার সব সম্ভাবনা ব্যর্থ হওয়ায়, আমরা এই পদক্ষেপ করি।'

এই ঘটনার খবর শুনে শবনমের আত্মীয়রা হাসপাতালে গিয়ে দাবি করেন, রাজবীর বেকার হওয়ায় তাঁদের বিয়েতে আপত্তি ছিল, ধর্মটা কোনও ইস্যু নয়। যদিও এই দাবি খারিজ করে দিয়েছেন রাজবীর।
সাক্ষী তাজ, আত্মহত্যার পথে ভিনধর্মী প্রেমী যুগল সাক্ষী তাজ, আত্মহত্যার পথে ভিনধর্মী প্রেমী যুগল Reviewed by Thailand Life on 6:43 AM Rating: 5

No comments:

Powered by Blogger.