বৃহস্পতিবার আসল খেলা দেখাবে নিউ হরাইজনস। বলেছিলেন অ্যালাস স্টার্ন। নিউ হরাইজনস অভিযানের প্রধান গবেষক । মিলেও গেল তাঁর কথা। প্লুটোর সঙ্গে নব পরিচয় হল মর্ত্যবাসীর। এত দিন টেলিস্কোপের চোখে যা মিলত তার থেকে বহুগুণ ভাল এ দর্শন। জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের কাছে সোনার খনি। নিউ হরাইজনস-এর চোখের সামনে এক রহস্যময়ী ধীরে ধীরে মেলে ধরছে নিজেকে।

প্লুটো নিয়ে গবেষণায় নেতৃত্ব দিচ্ছেন অ্যালাস স্টার্ন। নিউ হরাইজনস-এর মৌন থাকার সময়েই সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, অপেক্ষা করুন। এখন যা দেখছেন তার থেকেও দশগুণ ভাল ভাবে দেখতে পাবেন প্লুটোকে। দেখতে পাবেন রঙিন প্লুটোকেও।
সেই ছবি প্রকাশ পেল আজ। বরফের পাহাড়ে ঢাকা প্লুটো আর তাঁর চাঁদ শ্যারণের পাহাড় আর উপত্যকা। এই ছবি দেখে চমকে গিয়েছেন স্বয়ং স্টার্ন-ই। ‘‘তথ্যগুলি অসাধারণ, প্লুটো আর শ্যারন মাথা ঘুরিয়ে দিচ্ছে,’’ বললেন তিনি।
চার ঘণ্টার পথ পেরিয়ে নিউ হরাইজনস-এর পাঠানো তথ্য ডাউনলোড হচ্ছে। তার থেকে যা মিলেছে তা থেকে আরও স্পষ্ট হচ্ছে প্লুটোর নিরক্ষীয় অঞ্চল। হৃদয়ের মতো দেখতে অংশ আসলে পর্বত শ্রেণি। বরফ ঢাকা অঞ্চলের উপরে দাঁড়িয়ে থাকা সে পর্বতে উচ্চতা ৩৫০০ মিটার পর্যন্ত। বয়সের ফারাক আছে। এর মধ্যে পুরনো পর্বতগুলি তৈরি হয়েছে ১০ কোটি বছর আগে। নতুনগুলি তৈরি হয়েছে চার কোটি বছর আগে। নাসার মতে, এর মানে প্লুটোর পৃষ্ঠ এখনও সক্রিয়। হয়তো সৌরজগতের মধ্যে ভূতাত্ত্বিক ভাবে সবচেয়ে সক্রিয়। কিন্তু অন্য গ্রহ বা উপগ্রহের মাধ্যাকর্ষণের প্রভাব প্লুটোর উপরে পড়া সম্ভব নয়। তা হলে কী ভাবে এই সক্রিয়তা? এ বার নতুন করে ভাবতে হতে পারে বলে মত নাসার।
নবীন আছে শ্যারণও। খাঁজ আর ভাঁজে ভরা নবীনা। একটি ভাঁজ তো প্রায় এক হাজার কিলোমিটার দীর্ঘ। তার মানে শ্যারনও ভূতাত্ত্বিক ভাবে সক্রিয় রয়েছে। চলছে নানা ভাঙা-গড়ার খেলা। একটি উপত্যকরাও খোঁজ মিলছে, যা সাত থেকে ন’কিলোমিটার দীর্ঘ। দেখা গিয়েছে শ্যারনের উত্তর মেরুতে কালো কিছুর আস্তরণ পড়ে আছে। কী তা? জানতে আরও বিশ্লেষণ প্রয়োজন।
শ্যারন ছাড়াও নিউ হরাইজনস প্লুটোর আরও চারটি উপগ্রহ হাইড্রা, কেরবেরোস, নিক্স এবং স্টিকেও দেখেছে। এর মধ্যে ৪৩ থেকে ৩০ কিলোমিটার দীর্ঘ  হাইড্রার কোনও নির্দিষ্ট আকৃতি নেই।
তবে এখানেই শেষ নয়। অভিযানের সদস্যরা জানাচ্ছেন, আরও চমকে দেবে নিউ হরাইজনস। আরও উন্মোচিত হবে প্লুটোর সৌন্দর্য।