মহাকাশে যাবেন? পকেটে ভালমতো রেস্তো আছে তো? উত্তর হ্যাঁ হলে নির্ভয় থাকুন। কারণ, নিকষ কালো আঁধারের মাঝে সে যাত্রায় আপনার সঙ্গে থাকবেন সুনীতা উইলিয়ামস। গভীর আঁধারের মধ্যে যখন আপনার চোখ আটকে থাকবে মায়াময় নীল পৃথিবীর দিকে, যখন আপনি আরও কাছ থেকে চাঁদ দেখে বিস্মিত হবেন তখন সুনীতার অভিজ্ঞ হাতে নিয়ন্ত্রিত হবে আপনার মহাকাশযান। এই কাজের জন্যই সুনীতা-সহ চার জন অভিজ্ঞ মহাকাশচারীকে বেছে নিয়েছে নাসা।
এত দিন নিজে গিয়েছেন। এ বার মহাকাশে পর্যটক নিয়ে যাবেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত মহাকাশচারী সুনীতা উইলিয়ামস। পর্যটকদের মহাকাশযানে করে পৃথিবীর খুব কাছের কক্ষপথে ঘুরিয়ে আনা হবে। বেসরকারি ক্ষেত্রের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে এই কাজে নেমেছে মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা নাসাকে লাভজনক কাজে লাগানোর যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তারই অন্যতম পদক্ষেপ এটি। এই কাজের জন্যই চার অভিজ্ঞ মহাকাশচারীকে বেছে নিল নাসা, যাঁর মধ্যে এক জন সুনীতা।

এরকম যানেই পাড়ি দেওয়া যাবে মহাকাশে
এক সময়ে মার্কিন নৌসেনার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন সুনীতা। এর মধ্যেই দু’বার মহাকাশে গিয়ে ৩২২ দিন কাটিয়েছেন। প্রায় ৫০ ঘণ্টা ৪০ মিনিট তিনি মহাকাশে পদচারণা করেছেন। মহিলা মহাকাশচারীদের মধ্যে এটি রেকর্ড। সুনীতা ছাড়াও এই দলে রয়েছেন রবার্ট বেনকেন, এরিক বো এবং ডগলাস হার্লে। বেসরকারি সংস্থাগুলির সঙ্গে নতুন মহাকাশযান তৈরি, প্রশিক্ষণ, পরিকাঠামো তৈরি এবং আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে মানুষ নিয়ে যাওয়া-আসার কাজে যুক্ত থাকবেন তাঁরা। একই সঙ্গে ২০৩০-এ মঙ্গলে মানুষ পাঠানোর কাজের সঙ্গেও যুক্ত থাকবেন এঁরা।
এত দিন মহাকাশে পর্যটক নিয়ে যেতে গেলে বেসরকারি সংস্থাগুলিকে রাশিয়ার উপরে ভরসা করতে হত। রাশিয়ার সেই একাধিপত্যে ভাগ বসাতেই নাসার এই উদ্যোগ। মহাকাশে পর্যটক নিয়ে যেতে সুনীতা বোয়িং, স্পেস এক্স-এর মতো সংস্থার সঙ্গে কাজ করবেন। এর মধ্যেই এই সংস্থাগুলি আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশন-এর নানা কাজের সঙ্গে যুক্ত। ২০১৭-এ এই বেসরকারি সংস্থাগুলির সঙ্গে যৌথ ভাবে আবার উৎক্ষেপণের কাজ শুরু করবে নাসা। শুধু গবেষণাই নয়, মহাকাশ থেকে অর্থ উপার্জনও নাসার অন্যতম উদ্দেশ্য। বেশ কয়েক বছরের নাসার বাজেটে বড়সড় কাটছাঁট করেছে মার্কিন সরকার। ফলে এর মধ্যে নাসার মহাকাশযানগুলিকে বসিয়ে দিতে হয়েছে। তা ছাড়া অন্য প্রকল্পগুলির জন্যও বাজেট কমাতে হচ্ছে। তাই খরচ তুলতে বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে হাত মেলাচ্ছে নাসা